‘আকসার কান্না’ বইয়ের

 

 

লেখকের কথা

 

সোনালি মুক্তা

 

 

সাধারণত কাগজের বুকে কলমের কালিতেই বই লেখা হয়। তেমনই কাগজের সমারোহে এটিও একটি বই। কিন্তু এর আলোচনাগুলো কলমের কালির নয়; বরং কলজে নিংড়ানো রক্তে লেখা কথামালায় সাজানো।

 

বায়তুল মাকদিস আমাদের এমন সম্মানিত ঐতিহ্য; যার সংরক্ষণ এবং দেখাশোনার দায়িত্ব আল্লাহ তাআলা আমাদের দিয়েছেন। ইহুদি-নাসারারা যখন এ সম্মানিত ইবাদাতখানার পবিত্রতা রক্ষা না করে তাঁর পবিত্র পরিবেশকে পাপের বিষাক্ততায় ভরিয়ে তোলে এবং বারংবার সতর্ক করার পরও অন্যায় কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখে তখন মহান প্রতিপালক তাদের নির্বাচিতদের তালিকা থেকে বঞ্চিত করে উম্মাতে মুহাম্মাদির ওপর এ পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করেন।

 

যে দিন থেকে সাহাবায়ে কিরাম রা. আসমানি সাহায্যে বায়তুল মাকদিস বিজয় করেছিলেন, সে দিন থেকেই এ আমানত আমাদের আত্মমর্যাদা এবং ইমানের পরীক্ষার কষ্টিপাথরে পরিণত হয়েছে। বায়তুল মাকদিসের সংরক্ষণের ব্রত পালনে যথাযথভাবে উত্তীর্ণ হতে পারার মধ্যে আমাদের উন্নতির স্থায়িত্বের মূলমন্ত্র নিহিত রয়েছে। একইভাবে তার পবিত্রতায় একটু আঁচড়ই আমাদের নির্বাচিত উম্মাত হওয়ার মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে দিতে পারে।

 

আল্লাহর অপার মহিমায় আমরা এমন একটি যুগে বসবাস করছি, যখন কপালপোড়া ইহুদিদের ছোঁয়া এ পবিত্র ভূমির আঙিনাকে স্পর্শ করছে। যার স্পষ্ট অর্থ হলো, হক-বাতিলের এমন মহাযুদ্ধ আমাদের সামনে অপেক্ষমাণ, যেখানে আমরা হকের পক্ষে অংশ নিয়ে অফুরন্ত সাওয়াবের পাশাপাশি সৌভাগ্যের তিলক নিজেদের ললাটে নিশ্চিত করতে পারি আর সেটিই হবে আমাদের মুক্তির সনদ।

 

সাধারণত বলা হয়, আমাদের মাঝে সালাহুদ্দিন আইয়ুবি নেই, যার নেতৃত্বে যুদ্ধ করা সম্ভব। বাস্তবতা হচ্ছে, আইয়ুবি তো অনেক আছে; কিন্তু এমন নুরুদ্দিন জঙ্গি নেই, যিনি সালাহুদ্দিনকে সুলতান সালাহুদ্দিনে পরিণত করবেন। আমাদের মধ্যে কাদির খান অনেক আছে; কিন্তু তাকে ডক্টর আবদুল কাদির খানে পরিণত করবে—এমন কারিগরের বড়ই অভাব। অপরদিকে কোনো অচেনা তারকা নিজের আলোতে কখনো দীপ্তিমান হতে চাইলে সাধারণত তাকে অবজ্ঞা-অবহেলাই করা হয়। আমাদের উচিত, এ ধ্বংসাত্মক আচরণ পরিহার করে যোগ্যকে উৎসাহ প্রদান ও ব্যক্তি গঠনের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। মাটি বড় উর্বর প্রিয়, অপেক্ষা শুধু সিঞ্চনের।

 

এ জগতের সবচে বড় ফিতনা হচ্ছে দাজ্জালের ফিতনা। এ ফিতনার কেন্দ্রভূমি হবে সেই পবিত্র ভূমি। আবার সেই ফিতনার বিনাশ ও সমাপ্তিও হবে এ ভূমিতেই। এ ফিতনার প্রারম্ভিকতা আমরা ইতিমধ্যে দেখতেই পাচ্ছি। আর যারা তাকওয়া ও জিহাদি বলে বলিয়ান হয়ে মাঠে নামবে, তাদের সফলতাও আমরা দেখতে আশাবাদী। সৌভাগ্যবান তারা, যারা কিনা এ ফিতনার বিরুদ্ধে লড়াকু সৈন্যদের সহযোদ্ধা হবে। এ সামান্য অশ্রুর নজরানা সেই মহামানবদের জন্যই।

 

আশাবাদী থাকব, যেন এ অশ্রু অক্ষমতা ও অসহায়ত্বের না হয়; বরং এ অশ্রু যেন হয় বিধ্বংসী বিস্ফোরকের ফিউজতুল্য। যে অশ্রুতে থাকবে না মৃত্যুর শীতলতা; বরং সে তপ্ত অশ্রুতে থাকবে অগ্নিকু-ের বিভীষিকা।

 

অশ্রুবিন্দুর এক ফোঁটা হবে মসজিদে আকসার নামে, যা ছিল সর্বোচ্চ সম্মানিত বান্দাগণের সিজদাবনত হওয়ার স্থান। আরেক ফোঁটা সঞ্চিত থাকবে সোনালি গম্বুজ—Dome of the Rock (ডোম অব দ্য রক)-এর ওই সোনালি মুক্তার নামে, যার আশেপাশে পবিত্র মহামানবেরা সারিবদ্ধ হয়ে দাজ্জালের ফৌজের বিরুদ্ধে ত্যাগের বীরত্বগাঁথা রচনা করবেন। আল্লাহ আমাদের তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করুন।

 

ডাউনলোড লিঙ্ক

👇👇👇👇👇👇👇👇

আকসার কান্না বই pdf download